আজ ২৪শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

বংশ পরম্পরার রাজনীতি থেকে কী বেরিয়ে আসছে বিএনপি?


অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর টপ সিক্রেট সংস্কৃতি হলো বংশ পরম্পরা। অর্থাৎ পিতা বা মাতা কেউ দলের বড় নেতা হলে তাদের সন্তানরাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ার পেয়ে যান। এজন্য প্রায়শ কেন্দ্রের দেয়া সিদ্ধান্ত অমান্য করে থাকে তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কমিটি বিলুপ্তি ও নতুন কমিটি ঘোষণার খবর ছেয়ে গেছে সারাদেশে। কারা থাকছেন এবারের কমিটিতে? বিএনপি কী সাংগঠনিক ক্ষমতা নিয়ে আবার দাঁড়াতে পারবে? দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী স্থিতিশীল হবে? এ ধরনের অসংখ্য প্রশ্ন এখন জনমনে?

রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘এর আগেও বিএনপি একাধিকবার নিজেদের দলকে সংগঠিত করতে কমিটি ঘোষণা করেছিলো কিন্তু সেগুলো ধোপে টিকেনি। তার অন্যতম কারণ বংশ পরম্পরার রাজনীতি।’

এবারের ঘটনা অবশ্য একটৃু ভিন্ন। সূত্র বলছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনি বাধ্যবাধকতা থাকার কারণে ২০২৫ সালে কাউন্সিল করতে চায় বিএনপি। বর্তমানে সে লক্ষ্য নিয়েই এগুচ্ছে দলটি।

তাই এবার আহ্বায়ক নয়, সরাসরি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে দল পুনর্গঠন করতে চাইছে বিএনপি। নতুন কমিটির শীর্ষ পদে কারা আসছেন? চট্টগ্রামের কমিটিতে নতুন কোনো মুখ কী দেখা যাবে? বংশ পরম্পরার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসছে বিএনপি?

বর্তমানে চট্টগ্রামে সাংগঠনিক পদে জায়গা করে নিয়েছেন সাবেক মেয়র মীর নাছিরের ছেলে ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। এছাড়া ১৮ সদস্যের স্পেশাল অ্যাসিটেন্ট টু দ্যা চেয়ারপার্সন ফরেন অ্যাফায়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটতে রাখা হয়েছে মীর নাছিরের পুত্রকে। এই কমিটিতে আরো আছেন বিএনপি নেতা আমীর খসরুর সন্তান ইসরাফিল খসরু। ১১ সদস্যের চেয়ারপার্সন ফরেন অ্যাফায়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসাবে আছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

এ কমিটি বিলুপ্ত করায় তৃণমুলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ডা. শাহাদাত হোসেনকে আহ্বায়ক ও আবুল হাশেম বক্করকে সদস্য সচিব করে ৩৯ সদস্যের নগর কমিটি করা হয়। তখন তিন মাসের মধ্যে তৃণমূলের সম্মেলন শেষ করে নগর কমিটি গঠন করতে বলা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কমিটি আর হয়নি।

আরও পড়ুন বিএনপি নেতা শামসুল হকের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী বলছেন, ডা. শাহাদাত হোসেন আর আবুল হাশেম বক্করের নেতৃত্বে বিগত দিনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি ঐক্যবদ্ধ ছিলো। একসময় নগর বিএনপিতে যত নেতা, তত গ্রুপের যে বদনাম ছিল তা এখন নেই। দলীয় ঐক্য অটুট রেখেই দায়িত্ব পালন করেছেন আহ্বায়ক কমিটির নেতারা। এরপরও কোনো কোনো নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গুডবুক থেকে সরে গেছেন বলে জানা গেছে।
এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নগরীর নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে একটি পক্ষ তৎপর হয়েছেন। তাদের তৎপরতা সফল হলে সামনে যে কমিটি হবে তাতে নতুন মুখ আসতে পারে, আবার বাদ পড়তে পারেন বিলুপ্ত কমিটির অনেকে।

নতুন কমিটিতে আসতে নেতাদের অনেকে তোড়জোর শুরু করে দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে তাদের অনুসারিদের ভাল পদে বসাতে তৎপর হয়ে উঠবেন বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। নতুন নেতৃত্বের আলোচনায় আছেন সভাপতি পদে বিলুপ্ত মহানগর কমিটির সদ্য সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও বিলুপ্ত কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, যিনি ২০০৮ সালে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে চান্দগাঁও- বোয়ালখালি আসন থেকে নির্বাচন করেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলম, ছাত্রদল মহানগরের সাবেক সভাপতি নাজিমুর রহমান, বিলুপ্ত কমিটির সদস্য আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল এবং নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তি।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দ্রুততম সময়ে নতুন কমিটি চান। তারা মনে করেন কমিটি গঠনে দেরি হলে নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের মনোবল ভেঙ্গে যেতে পারে। পদ-পদবি নিয়ে কলহ বিরোধও দেখা দিতে পারে। আওয়ামী লীগের মত দলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার জন্য যোগ্য এবং কর্মীবান্ধব নেতৃত্ব তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রত্যাশা করছেন তারা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর